Friday 16 January 2009

How I learned to write - by Binod Bera


বাবাকে হারিয়েছি জন্মের অগে। মায়ের মুখ লোকের কাছে শোনা। দেড় বছর বয়সে মৃত মায়ের বুকের স্তন পান করার সময় বুঝিনি আজ থেকে আমি তঁার ওম স্পর্শ থেকে বঞ্চিত হলাম। ছিয়াওরের মন্বন্তর আমাকে নিস্বঃ অনাথ করেছিল। একটু খাবার কেউ খেতে দিতো না। বার -তের বছর বয়স অব্দি ভাত কি তা জানতামনা। এর ওর বাড়ি থেকে ভাতের ম্য়ফ্যেন চেয়ে খেয়েছি।ছোটো থেকে লেখা -পড়া জানার প্রতি বিশেষ ঝঁোক ছিল। দেখতাম ছেলে মেয়েরা পাঠশালায় যাচ্ছে। আমি পাড়ার পাঠশালার বাহিরে জানালার পাশে বসে সমস্ত ছড়াগুলো শুনে শুনে মুখস্ত করে মনে রাখতাম।

৮-৯বছর বয়সে সমবয়সি ছেলেরা আমাকে অক্ষর চিনতে পড়তে শিখিয়েছিল। তারা সবাই ছিল আমার খেলার সাথি। আর বাড়িতে যখন কাকা জ্যেঠার ছেলেরা বসে পড়াশুনা করত আমি তখন দুরে অন্ধকারে বসে সব শুনতাম আর বারবার মনেমনে বলে মুখস্ত করতাম। সেদিন থেকে সকলের আড়ালে ঘরের পেছনের দেওয়ালেহাতের নোখ দিয়ে লেখা অভ্যাস করতাম। কিংবা বন্ধুদের ফেলে দেওয়া খাতা পেনসিল কুড়িয়ে তাতে যত টুকু জায়গা পেতাম তাতেই লেখার অভ্যাস করতেন।

প্রথম পড়ার ইচ্ছা আসে পাড়ার এক অনুষ্ঠানে কাশী দাসী মহাভারত সুর করে পড়া শুনে। তাতে বিশেষ আকর্ষনীয় পাঠ ছিল সপ্তরথী ঘিরে অভিমন্যূ বধ। কিন্তু গল্পটা শেষ না করে সবাই খেতে চলে যায়। অভিমন্যুর কিহল জানার তীব্র ইচ্ছা আমার মধ্যে। একদিন লোকের বাড়িতে সারাদিন কোদাল দিয়ে মাটি থেকে হলুদ তুলে দিয়ে বললাম আমি পয়সা নেব না আমায় একটা মহাভারত কিনে দাও। 
সেই থেকে পড়া শুরু। গ্রামের একটা লাইব্রেরি ছিল সেখানে পড়ার জন্যে বই চাইলে ওরা আমায় "চন্দ্রশেখর" নামে একটি উপন্যাসের বই দিয়ে সই করতে বলল। কিন্তু তখনও আমি নাম লিখতে শিখিনি জেনে শিক্ষকমশাই খুব অবাক হলেন বললেন আগে লেখা শিখ ! তিনি একটা পেন দিয়ে আমার হাত ধরে লিখে দিলেন। লাইব্রেরিতে প্রথমে একটা করে বই দিত সেটা পড়ে দু-ঘন্টার মধ্যে ফেরত দিয়ে অন্য বই নিতে চাইছি দেখে তারা অবাক ! এতো তাড়াতাড়ি পড়া কি করে সম্ভব !! বইটির ভেতর থেকে তারা নানারকম প্রশ্ন জিঙ্গেস করতেন আমি সমস্ত বলে দিতাম। সে দিন থেকে শিক্ষকমশাই বললেন তোমার যে কটা ইচ্ছে নিয়ে পড়ো। এক সপ্তাহে লাইব্রেরির সমস্ত বই পড়ে শেষ করে ফেললাম।

যখনই কোনো বই পড়তাম পড়া শেষে আমার মন্তব্য লিখে রাখতাম। পড়ার ভীষণ নেশা যা এখনো ও সমান ভাবে আছে। এছাড়া আমার একটা গুন ছিল আমি খুব সুন্দর গল্প বলতে ও পড়ে শোনাতে পারতাম। এ জন্যে বন্ধুরা প্রায় আসতো গল্প শোনার জন্যে। অনেকে আমায় উত্‍সাহ দিতে লাগল তুমি লেখ একদিন অনেক বড় লেখক হবে... প্রথম মৌলিক কোন লিখতে গিয়ে বেশ মুশকিলে পড়েছিলাম কিছু তেই পারছি না। অনেক কষ্টে একটি গল্প লিখেছিলাম। নাম ছিল তার "ধূলির বাসর"। নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায় খুব প্রশংসা করলেন। বললেন খুবই সম্ভাবনাময় এবং সকল গ্রামবাসীরা প্রবল উচ্ছাস দেখাল। একটি মাসিক পত্রিকায় প্রতি মাসে জোর করে আমাকে দিয়ে লেখাতে লাগল।

ষাটের দশকে "চীনার নাম ঘৃনা" নামে একটা বই লিখে কলকাতার বড় বড় লেখকের মনে আলোড়ন তুললেন। সে সময় সমস্ত বড় বড় পত্রিকায় আমার লেখা ছাপা হতো।

-----------------------------------
আজ, কিছু কলেজে ও স্কুলে পাঠ্যবইএ বিনোদ বেরার কবিতা আছে।

লিখেছে : বীথি বেরা

1 comment:

nitai chandra ray said...

while writing the report , Bithi has mixed up 1st.person & 3rd person.
chronological history of Binod Bera's life & writings should havebeen mentioned .
quote a few lines from his famous poems to illustrate his style &
stature .
nitai chandra ray .
EMAIL ID : nita_2991@bsnl.in
26.nov.2009